মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে বাইকগার্ড GPS ট্র্যাকারের সেরা ৫টি ফিচার

ঢাকার রাস্তায় বাইক চালানো শুধু মাত্র যাতায়াত নয়, এটি অনেকের জীবনের অংশ। কিন্তু, আজকের দিনে এই বাইকের এর সাথে বেড়েছে বাইক চুরি, রুট বিভ্রাট, আর নানান নিরাপত্তাহীনতা। প্রতিদিন ফেসবুক বা খবরের কাগজে দেখা যায়-“বাইক চুরি হয়ে গেছে”, “গ্যারেজ থেকে উধাও”, “পুলিশ এখনো খুঁজে পায়নি”। এই ধরনের ঘটনা থেকে বাঁচতে এখন অনেক বাইকারই বেছে নিচ্ছেন একটি স্মার্ট সমাধান জিপিএস ট্র্যাকার। কিন্তু শুধু জিপিএস ট্র্যাকার থাকলেই হবে না, জানতে হবে কোন কোন ফিচার আপনার জন্য সত্যিকার অর্থেই লাইফসেভার। চলুন জেনে নিই এমন বাইকগার্ড GPS ট্র্যাকারের সেরা ৫টি ফিচার যা আপনার বাইককে দিবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা।

সূচীপত্র

বাইকগার্ড GPS ট্র্যাকারের সেরা ৫টি ফিচার

টেকনোলজির হাত ধরে বাইক সুরক্ষায় এসেছে নতুন যুগ। স্মার্ট জিপিএস ট্র্যাকারগুলো শুধু লোকেশন জানায় না—চোর ধরতে, ইঞ্জিন বন্ধ করতে, এমনকি পুরো রাইড হিস্টোরি ধরে রাখতে পারে। চলুন জেনে নিই এমন ৫টি অসাধারণ ফিচার যা আজকের বাইকারদের জন্য অপরিহার্য।

১। রিয়েল-টাইম লোকেশন ট্র্যাকিং

এই ফিচারটি জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা। আপনি অ্যাপের মাধ্যমে আপনার বাইক এই মুহূর্তে কোথায় আছে, সেটা লাইভ দেখতে পারবেন। বাইক চুরি হলেও আপনি ঠিক কোন রাস্তায় বা এলাকায় যাচ্ছে, তা জানতে পারবেন। বাইক যদি অন্য কেউ চালায় (ফ্যামিলি, বন্ধু বা ডেলিভারি ম্যান), তাও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। অনেক সময় চোর বাইক নিয়ে মুভ করার আগেই রিয়েল-টাইম লোকেশন ধরতে পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করা সহজ হয়।

২। জিও-ফেন্স এলার্ট

জিপিএস ট্র্যাকার আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সীমানা সেট করার সুযোগ দেয় এটিকে বলা হয় জিও-ফেন্স। আপনি ধরে দিতে পারেন “এই বাইকটি শুধু এই এরিয়ার মধ্যেই থাকবে”। বাইক সেই সীমানা পেরিয়ে গেলেই আপনি মোবাইলে তাৎক্ষণিক এলার্ট পাবেন।

  • আপনার ছেলে বাইক নিয়ে কোচিং যাবে, কিন্তু সে যদি গুলশান থেকে ধানমন্ডি চলে যায় সঙ্গে সঙ্গে আপনি জানবেন।
  • রাতে গ্যারেজে রাখা বাইক হঠাৎ নড়াচড়া করলেই নোটিফিকেশন পাবেন।

এটি বাইক চুরি প্রতিরোধে একটি অসাধারণ সিকিউরিটি লেয়ার।

৩। ইঞ্জিন লক

অনেক আধুনিক GPS ট্র্যাকার একটি শক্তিশালী ফিচার হচ্ছে রিমোট ইঞ্জিন স্টপ। আপনি চাইলে অ্যাপের মাধ্যমে বাইকের ইঞ্জিন লক করে দিতে পারবেন। এমনকি বাইক চলমান অবস্থায়ও সেটি নিরাপদভাবে বন্ধ হয়ে যাবে (নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে)। চোর বাইক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে? আপনি মোবাইলে একটি বাটনে ক্লিক করে বাইক থামিয়ে দিতে পারেন। বাইকটি যদি নির্ধারিত এলাকা ছাড়ায়, তখনও আপনি ইঞ্জিন অফ করে দিতে পারেন। এই ফিচারটি সবচেয়ে বেশি কাজ করে বাইক চুরির সময়।

৪। ট্রিপ হিস্টোরি ও রিপোর্ট

আপনার বাইক কোথায় কোথায় গিয়েছে, কতটুকু সময় ছিল, কোন রুটে চলেছে – সব কিছু আপনি দেখতে পারবেন রাইড হিস্টোরি ফিচারে। GPS অ্যাপ আপনাকে ৭ দিন, ৩০ দিন এমনকি নির্দিষ্ট ডেট অনুযায়ী রিপোর্ট দিতে পারে। বাইক যদি অফিস বা ডেলিভারি কাজে ব্যবহৃত হয়, তাহলে ট্রিপ হিস্টোরি । কোন রুটে সবচেয়ে কম সময় লাগে বা জ্যাম থাকে না, এটিও চেক করা যায়। এটি আপনার বাইক ব্যবহারের উপর নজর রাখতেও সাহায্য করে।

৫। ডিভাইস রিমুভাল অ্যালার্ট

আপনার বাইকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যত ভালোই হোক, চোরেরা কিন্তু সুযোগ পেলেই ট্র্যাকার খুলে ফেলতে চেষ্টা করে। অনেকেই ভাবেন, বাইকে ট্র্যাকার বসালেই সব নিরাপদ। কিন্তু যদি কেউ সেটি খুলে ফেলে? ঠিক এই সমস্যার সমাধান দেয় ডিভাইস রিমুভাল এলার্ট। এই ফিচারটি চালু থাকলে, কেউ যদি আপনার বাইক থেকে ট্র্যাকার খুলতে যায়, সঙ্গে সঙ্গে আপনার মোবাইলে নোটিফিকেশন চলে আসবে। ফলে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, তাৎক্ষণিক জানতে পারবেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

Bike Guard-এর এই ফিচার সাধারণ ট্র্যাকারগুলোর মতো শুধু লোকেশন ট্র্যাক করে না, বরং আপনার বাইককে চোরের হাত থেকে রক্ষা করতেও সক্রিয়ভাবে কাজ করে। তাই যারা নিজের বাইকের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য ডিভাইস রিমুভাল এলার্ট সত্যিই এক গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা।

ফিচারগুলো কার জন্য সবচেয়ে দরকারি?

উপরের ৫টি জিপিএস ট্র্যাকার ফিচার অনেকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে কিছু ব্যবহারকারীর জন্য এগুলো একেবারে অপরিহার্য। নিচে দেখে নিন, আপনি কোন ক্যাটাগরিতে পড়েন:

  • ডেলিভারি বাইকারঃ যারা প্রতিদিন খাবার, কুরিয়ার বা অনলাইন পণ্য ডেলিভারি করেন, তাদের জন্য রাইড হিস্টোরি, রিয়েল-টাইম লোকেশন এবং জিও-ফেন্স ফিচার অত্যন্ত উপযোগী। এই ফিচারগুলো রুট পরিকল্পনা সহজ করে, সময় বাঁচায় এবং কাজের ট্র্যাকিং রাখতে সাহায্য করে।
  • পরিবারের ব্যবহারঃ যদি আপনি পরিবারের কারও জন্য বাইক কিনে দেন—যেমন ছেলেমেয়েরা কোচিং, ভার্সিটি বা কাজের জন্য বাইক ব্যবহার করে—তাহলে লোকেশন ট্র্যাকিং ও জিও-ফেন্স ফিচার আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
  • অফিস-কমিউট বাইকারঃ যারা প্রতিদিন অফিসে যাতায়াতের জন্য বাইক চালান এবং বাইক দিনের বেশিরভাগ সময় পার্কিংয়ে থাকে, তাদের জন্য মোশন অ্যালার্ট ও ভাইব্রেশন সেন্সর অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাইকে কেউ হাত দিলে বা সরানোর চেষ্টা করলে আপনি তাৎক্ষণিক জানবেন।
  • নতুন রাইডারঃ যারা বাইক চালানো নতুন শিখছেন বা রাস্তায় এখনো পুরোপুরি অভ্যস্ত নন, তাদের জন্য রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং ও রিমোট ইঞ্জিন স্টপ ফিচার খুবই সহায়ক। বাইকের সঠিক অবস্থান জানা ও প্রয়োজনে দূর থেকে ইঞ্জিন বন্ধ করতে পারার সুযোগ নিরাপত্তা আরও বাড়িয়ে তোলে।
  • বাইক রেন্টাল ও শেয়ারিং সার্ভিসঃ যারা বাইক ভাড়া দেন বা রাইড শেয়ারিং ব্যবসা করেন, তাদের প্রতিটি বাইকে GPS ট্র্যাকার থাকা প্রায় বাধ্যতামূলক। এতে যেকোনো সময়ে বাইকের অবস্থান, রুট, ব্যবহারকারীর গতিবিধি জানা সম্ভব হয় এবং অপব্যবহার রোধ করা যায়।

শেষকথা

একটা বাইক কেবল যানবাহন নয়-অনেকের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেটা হতে পারে দৈনন্দিন যাতায়াত, অফিস যাওয়ার মাধ্যম, ডেলিভারি ব্যবসার বাহন, বা কারও ব্যক্তিগত প্যাশনের প্রতিফলন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদটি যদি নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে, তাহলে সেটা শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, মানসিক চাপও তৈরি করে। তাই আপনার বাইক যদি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে আজই একটি ভালো জিপিএস ট্র্যাকার ইনস্টল করার কথা ভাবুন। আরও পড়ুন মোটরসাইকেল চুরি ঠেকানোর আরও ৬টি কৌশল!

শখের মোটরসাইকেলের সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে পারেন বাইকগার্ড জিপিএস ট্র্যাকার। ফিচার হিসাবে পাচ্ছেন ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, লাইভ ট্র্যাকিং, জিও-ফেন্সিং, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন বাইকগার্ড প্যাকেজ সমূহ অথবা চাইলে আমাদের এক্সপার্ট টিমের সহযোগিতা পেতে নিচের ফরমটি জমা দিতে পারেন।

    মোটরসাইকেল সুরক্ষায় বাইকগার্ড সম্পর্কে জানতে




    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *