আজকাল শুধু বাইক কেনাই যথেষ্ট নয়-সুরক্ষা নিশ্চিত করাও জরুরি। বাইক চুরি, হাইজ্যাক বা ট্র্যাক হারিয়ে ফেলা এখনকার সময়ের অন্যতম বড় সমস্যা। আর এই সমস্যার সমাধান দিচ্ছে জিপিএস ট্র্যাকার (GPS Tracker)। কিন্তু বাজারে এতগুলো ট্র্যাকার, নানা ফিচার আর দাম—কোনটা নেবেন? কিভাবে বুঝবেন কোনটি আপনার বাইকের জন্য পারফেক্ট? এই ব্লগে আলোচনা করবো বাইকের জন্য জিপিএস ট্র্যাকার কেনার আগে যে ৫টি বিষয় জানা সবচেয়ে জরুরি, যাতে আপনি টাকা খরচ করার আগেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
সূচীপত্র
যে ৫টি বিষয় খেয়াল রাখবে
অনেকেই GPS ট্র্যাকার কিনে ফেলেন শুধুমাত্র লোকেশন দেখার উদ্দেশ্যে, কিন্তু কিছুদিন পর বুঝতে পারেন যে চুরি প্রতিরোধ, রিমোট কন্ট্রোল বা বাইকের সীমার মধ্যে থাকা নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলো তাদের ট্র্যাকারটিতে নেই। ফলে মূল উদ্দেশ্যটাই অপূর্ণ থেকে যায়। একটি সঠিক ট্র্যাকার কেবল বাইকের অবস্থান জানায় না-এটি আপনার নিরাপত্তার অংশ হয়ে ওঠে। তাই নিচের ৫টি বিষয়ের প্রতিটিই ভালোভাবে যাচাই করে নিন।
১. রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিংয়ের গুণগত মান কেমন?
সব জিপিএস ট্র্যাকার রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং দেয় না। অনেকে শুধু আপডেটেড লোকেশন দেখায়, সেটা আবার ৫-১০ মিনিট দেরিতে। আপনার বাইকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দরকার লাইভ লোকেশন ট্র্যাকিং—মানে বাইক এখনই কোথায় আছে, কোন রাস্তায় যাচ্ছে, কত স্পিডে চলছে তা সেকেন্ডে সেকেন্ডে জানা।
যা দেখবেন:
- কত সেকেন্ডে লোকেশন আপডেট হয়? (Real-time vs Delay)
- লোকেশন আপডেটে ইন্টারনেট কানেকশন প্রয়োজন হয় কি না?
- লোকেশন কতটুকু সঠিক? (± 5 মিটার?)
টিপস: ট্র্যাকারের সঙ্গে থাকা অ্যাপ কেমন কাজ করে, সেটা ডেমো ভিডিও দেখে বা ইউজার রিভিউ পড়ে যাচাই করে নিন।
২. ইঞ্জিন লক সুবিধা আছে কি না?
বাইক চুরি ঠেকাতে সবচেয়ে কার্যকর ফিচার হলো “ইঞ্জিন লক”। এই ফিচারের মাধ্যমে আপনি মোবাইল থেকে বাইকের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিতে পারবেন। চোর যদি চাবি দিয়েও স্টার্ট করতে চায়, বাইক চলবে না।
যা দেখবেন:
- ইঞ্জিন লক করা ও খোলার জন্য মোবাইলে কত সময় লাগে?
- বাইকের ইঞ্জিন অন-অফ করার কন্ট্রোল কতটা নির্ভরযোগ্য?
- বাইকে লাগানো ইলেকট্রিক সিস্টেমের সাথে কেমনভাবে সংযুক্ত হয়?
অতিরিক্ত সুবিধা: কিছু কিছু জিপিএস ট্র্যাকার আছে যারা অটো লক ফিচার দেয়-এতে আপনার সেট করা সময় বা লোকেশন অনুযায়ী বাইক নিজেই লক হয়ে যাবে।
৩. Geo-Fence ফিচার আছে কি না?
Geo-Fence ফিচার হচ্ছে বাইকের চারপাশে একটি ডিজিটাল সীমানা তৈরি করা। বাইক সেই সীমানা ছাড়ালেই আপনার মোবাইলে অ্যালার্ট চলে আসবে। এই ফিচার পরিবার বা ব্যবসার কাজে ব্যবহার করা বাইকের জন্য দারুণ সহায়ক। যেমন:
- আপনি চাইছেন, বাইক নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে না যাক।
- কিশোর চালকদের জন্য মনিটরিং সুবিধা।
যা দেখবেন:
- একাধিক জিও-ফেন্স সেট করা যায় কি?
- সীমানা নির্ধারণে কাস্টমাইজেশন কতটুকু?
- অ্যালার্ট SMS, অ্যাপ বা ইমেইলে পাওয়া যায় কি?
ব্যবহার উদাহরণ: আপনি বাইক অফিসে রেখে এলেন। যদি কেউ বাইক নেড়ে অন্যত্র নিতে চায়, আপনার মোবাইলেই সাথে সাথে নোটিফিকেশন আসবে।
৪. ব্যাটারি ব্যাকআপ ও পাওয়ার কানেকশন সিস্টেম
অনেক GPS ট্র্যাকার বাইকের ব্যাটারির উপর নির্ভর করে চলে। যদি ব্যাটারি খারাপ হয় বা কেউ কেটে ফেলে, তখন ট্র্যাকিং বন্ধ হয়ে যায়।
যা যাচাই করবেন:
- ট্র্যাকারটি বাইকের ব্যাটারির সাথে সংযুক্ত নাকি নিজস্ব ব্যাটারি আছে?
- ব্যাটারি ব্যাকআপ কত ঘণ্টা বা দিন চলে?
- ব্যাটারি চার্জের এলার্ট সুবিধা আছে কি না?
আরও ভালো হয় যদি: ট্র্যাকারটিতে Tamper Alert থাকে—মানে কেউ যদি ডিভাইস খুলতে চায়, সাথে সাথে আপনার ফোনে অ্যালার্ট আসবে।
৫. অ্যাপ ইউজার ইন্টারফেস ও কাস্টমার সাপোর্ট
জিপিএস ট্র্যাকার ভালো হলেও, যদি এর অ্যাপ বা সফটওয়্যার ইউজ করা ঝামেলার হয়—তাহলে আপনি পুরো সুবিধা পাবেন না। এবং যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত কাস্টমার সাপোর্টও জরুরি।
যা যাচাই করবেন:
- অ্যাপটি কতটা ইউজার ফ্রেন্ডলি? (রেটিং/ইউজার রিভিউ চেক করুন)
- মোবাইল অ্যাপ ছাড়া কি ওয়েব থেকেও ট্র্যাকিং করা যায়?
- কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার সাপোর্ট কেমন? (কতদিনে রিপ্লাই দেয়, টেকনিক্যাল সাপোর্ট কীভাবে দেয়)
টিপস: এমন ব্র্যান্ড বেছে নিন যারা বাংলাদেশে লোকাল অফিস বা কাস্টমার সাপোর্ট রাখে।
শেষকথা
জিপিএস ট্র্যাকার কেবল একটা যন্ত্র নয়, এটা আপনার শান্তির গ্যারান্টি। বাজারে হাজারো ট্র্যাকার থাকলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আপনি শুধু চুরি ঠেকাতে পারবেন না—একটি সম্পূর্ণ কন্ট্রোল সিস্টেম পেয়ে যাবেন আপনার বাইকের জন্য। তাই, কিনুন বুঝে, ব্যবহার করুন নিশ্চিন্তে। আর যদি খুঁজে থাকেন এমন একটি ট্র্যাকার যা বাংলাদেশি রাস্তা, ব্যবহারকারী ও প্রয়োজনের সাথে মানানসই তাহলে Bike Guard GPS Tracker হতে পারে আপনার সেরা সঙ্গী।
শখের মোটরসাইকেলের সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে পারেন বাইকগার্ড জিপিএস ট্র্যাকার। ফিচার হিসাবে পাচ্ছেন ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, লাইভ ট্র্যাকিং, জিও-ফেন্সিং, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন বাইকগার্ড প্যাকেজ সমূহ অথবা চাইলে আমাদের এক্সপার্ট টিমের সহযোগিতা পেতে নিচের ফরমটি জমা দিতে পারেন।